আমার দেশ ‘শখের বশে শিশু হত্যা করে’, ইসরায়েলি নেতার বক্তব্যে তোলপাড় :
অনলাইন ডেস্ক:
ইসরায়েলের একজন শীর্ষস্থানীয় বিরোধী নেতা মঙ্গলবার বলেছেন, তার দেশ এখন এমন এক পররাষ্ট্রবিচ্ছিন্ন রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে, যারা ‘শখের বশে শিশু হত্যা করে’। গাজায় চলমান গণহত্যা নিয়ে কোনো ইসরায়েলি নেতার কাছ থেকে এটিই সবচেয়ে কড়া ও স্পষ্ট সমালোচনা।ইসরায়েলের বামপন্থী দল ডেমোক্র্যাটসের প্রধান এবং বিরোধী নেতা ইয়ায়ির গোলান দেশটির জাতীয় সম্প্রচারমাধ্যম কানের কাছে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘ইসরায়েল এখন পররাষ্ট্রবিচ্ছিন্ন রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার পথে, যেমনটি দক্ষিণ আফ্রিকা ছিল। যদি আমরা সুস্থ মস্তিষ্কে পরিচালিত দেশ হিসেবে ফিরে না যাই।’তিনি আরও বলেন, ‘একটি সুস্থ দেশ সাধারণ নাগরিকদের সঙ্গে যুদ্ধ করে না, শখের বসে শিশু হত্যা করে না এবং জনসংখ্যা বিতাড়নের লক্ষ্যে নিজেকে উৎসর্গ করে না।’গোলান বলেন, ‘এই সরকার প্রতিশোধপরায়ণ, নৈতিকতাহীন এবং সংকটকালে রাষ্ট্র পরিচালনার সক্ষমতা থেকে সম্পূর্ণ বঞ্চিত একদল মানুষের দ্বারা পরিচালিত। তারা আমাদের অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ফেলেছে।’গোলানের এমন নজিরবিহীন বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও তার সরকারের সদস্যরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন থামাতে আন্তর্জাতিক আহ্বান উপেক্ষা করেও তারা সমালোচনাকে ‘উসকানি’ বলে দাবি করে।নেতানিয়াহু গোলানের বক্তব্যকে ‘রক্তচাপ সংক্রান্ত অপবাদ’ এবং ‘উন্মত্ত উসকানি’ বলে আখ্যায়িত করেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘আমি ইয়ায়ির গোলানের এই উগ্র উসকানিকে ঘৃণাভরে নিন্দা জানাই, যা আমাদের বীর সেনাদের ও রাষ্ট্র ইসরায়েলের বিরুদ্ধে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বিশ্বের সবচেয়ে নৈতিক বাহিনী।’২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েল গাজায় যে বর্বর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে, তাতে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫৩ হাজার ৫০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গত নভেম্বরে নেতানিয়াহু ও তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। পাশাপাশি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলাও চলছে।