যুদ্ধজাহাজ উদ্বোধনে ভয়াবহ দুর্ঘটনা, ক্ষুব্ধ কিম জং উন:
ডেস্ক রিপোর্ট:
উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন এক নতুন যুদ্ধজাহাজ উদ্বোধনের সময় ঘটে যাওয়া গুরুতর দুর্ঘটনাকে ‘অপরাধমূলক কাজ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি নির্মাণ প্রকল্পে নিযুক্ত ব্যক্তিদের ‘চরম দায়িত্বজ্ঞানহীন’ ও ‘অজ্ঞ’ আখ্যা দিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।বৃহস্পতিবার (২২ মে) দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় চংজিন শহরের একটি জাহাজ নির্মাণ কারখানায় ৫ হাজার টন ওজনের একটি ডেস্ট্রয়ার যুদ্ধজাহাজ উদ্বোধনের সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে। রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা জানায়, উদ্বোধনের মুহূর্তেই জাহাজটির নিচের অংশে বড় ধরনের ত্রুটি ধরা পড়ে, ফলে সেটি ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে।উপস্থিত ছিলেন কিম জং উন নিজেই। তিনি বলেন, “এই ঘটনা জাতির গৌরব ও মর্যাদায় আঘাত হেনেছে। এমন অবহেলা মেনে নেওয়া যায় না।” তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, আসন্ন জুন মাসে অনুষ্ঠেয় গুরুত্বপূর্ণ পার্টি সম্মেলনের আগেই যুদ্ধজাহাজটি মেরামত করে সম্পূর্ণ প্রস্তুত রাখতে হবে। একই সঙ্গে নকশা ও নির্মাণ সংশ্লিষ্টদের দ্রুত তদন্তের আওতায় আনতে হবে বলেও নির্দেশ দেন তিনি।রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এই দুর্ঘটনায় কোনো হতাহতের তথ্য প্রকাশ করেনি।উল্লেখযোগ্য যে, উত্তর কোরিয়ার মতো কঠোর নিয়ন্ত্রণাধীন রাষ্ট্রে এ ধরনের অভ্যন্তরীণ ব্যর্থতার খবর প্রকাশ হওয়া অত্যন্ত বিরল। তবে সম্প্রতি এমন কয়েকটি ব্যর্থতা সরকারিভাবে স্বীকার করা হয়েছে। যেমন—২০২৩ সালের নভেম্বরে একটি সামরিক স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ মাঝআকাশে বিস্ফোরিত হয় এবং আগের আগস্ট মাসে আরেকটি উৎক্ষেপণ প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।দুর্ঘটনার মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগেই দেশটি এই যুদ্ধজাহাজ প্রদর্শন করে দাবি করেছিল, এটি ৭০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র বহন করতে সক্ষম এবং আগামী বছরের শুরুতে মোতায়েন করা হবে। কিম জং উন এই জাহাজকে উত্তর কোরিয়ার নৌবাহিনীর আধুনিকায়নের প্রতীক হিসেবে তুলে ধরেছিলেন।তবে যুদ্ধজাহাজের এই ব্যর্থতা শুধু সামরিক সক্ষমতার প্রশ্নই নয়, বরং উত্তর কোরিয়ার ভেতরের শাসন কাঠামো ও শাস্তিনীতির প্রতিফলন ঘটাবে বলেই বিশ্লেষকদের ধারণা। এখন দেখার বিষয়, দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের কী ধরনের কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়।