১০ সন্তানকে বাসায় রেখে ডিউটিতে চিকিৎসক মা, পরে সেই হাসপাতালেই এলো ৭ জনের মরদেহ:

ডেস্ক রিপোর্ট :

গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিসে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ডা. আলা আল-নাজ্জার নামের এক চিকিৎসকের সাত শিশু সন্তান নিহত হয়েছেন। নিখোঁজ রয়েছে আরও দুই সন্তান। প্রাণে বেঁচে আছে কেবলমাত্র ১১ বছরের ছেলে অ্যাডাম।হৃদয়বিদারক এই ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন ডা. নাজ্জারের স্বামী হামদি, যিনি নিজেও একজন চিকিৎসক।শুক্রবার সকালে গাজার নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সে ডিউটিতে যান ডা. আলা আল-নাজ্জার। আর ঠিক সেই সময়েই খান ইউনিসের আলাদা একটি অঞ্চলে তাদের বাসায় চালানো হয় ভয়াবহ বিমান হামলা। আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় পুরো ঘর, পাশাপাশি পুড়ে অঙ্গার হয়ে যায় শিশুদের দেহ।গাজা সিভিল ডিফেন্স ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে জানা গেছে, নিহত সাত শিশুর দেহ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় বিকেলের পর। আর সাত মাস বয়সী এক শিশু ও ১২ বছরের এক কিশোর এখনও নিখোঁজ রয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ধারণা করা হচ্ছে, তাদেরও মৃত্যু হয়েছে।ঘটনার বর্ণনায় ডা. নাজ্জারের ভাতিজি ডা. সাহার আল-নাজ্জার বলেন, চাচা হামদি খাওয়ার আনতে গিয়েছিলেন। ফিরে এসে দেখেন, বাসার পাশে একটি মিসাইল পড়ে আছে, তবে বিস্ফোরণ হয়নি। তিনি ভেতরে ঢুকে সন্তানদের বের করতে যান। তখনই দ্বিতীয়বার বোমা পড়ে, আর সেটিতেই গুরুতর আহত হন তিনি।তিনি আরও জানান, আমার বাবা ছুটে গিয়ে অ্যাডামকে রাস্তায় পেয়ে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। চাচা হামদিকে উদ্ধার করে সিভিল ডিফেন্স। বাকি সবাই আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয়ে গেছে।এ ঘটনায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, খান ইউনিস এলাকায় তাদের বাহিনীর আশপাশে সশস্ত্র ‘সন্দেহভাজন’ ব্যক্তিদের উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়েছিল। তাদের লক্ষ্য করেই বিমান হামলা চালানো হয়েছে। তবে বেসামরিক মানুষের হতাহতের বিষয়টি তারা পর্যালোচনা করছে।হামলার দিন কয়েক পর ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর প্রধান এয়াল জামির খান ইউনিসে গিয়ে সেনাদের উদ্দেশে বলেন, হামাস প্রায় সব সামরিক অবকাঠামো হারিয়েছে। আমরা হামাসের শেষ ঘাঁটিগুলো ধ্বংস করে দেব এবং আমাদের জিম্মিদের ঘরে ফিরিয়ে আনব।গাজা সিভিল ডিফেন্স প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, বাড়িটির ধ্বংসস্তূপ থেকে শিশুদের দগ্ধ মরদেহ বের করে এনে সাদা কাপড়ে মোড়ানো হচ্ছে। কিছু উদ্ধারকর্মী আগুন নেভাতে ব্যস্ত, অন্যদিকে কেউ স্ট্রেচারে আহতদের তুলে দিচ্ছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *