যেসব পানীয় ভালো রাখবে আপনার লিভার:

ডেস্ক রিপোর্ট :

বিশ্বজুড়ে প্রতি বছর প্রায় ২০ লক্ষ মানুষ লিভারজনিত রোগে মারা যান, যা মোট মৃত্যুর প্রায় ৪%। অথচ শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ লিভার যা প্রোটিন হজম, খনিজ সঞ্চয়, পিত্ত উৎপাদন এবং রক্ত পরিশোধনের মতো ৫০০টিরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। এছাড়াও এটি শরীর থেকে অ্যালকোহল ও ওষুধের ক্ষতিকর উপাদান দূর করতে সাহায্য করে। তাই লিভারের সুস্থতা বজায় রাখা আমাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য অত্যন্ত জরুরি। আর এই কাজে সহায়তা করতে পারে কিছু সহজ ও প্রাকৃতিক পানীয়। নিচে এমন ৪টি উপকারী পানীয়ের কথা তুলে ধরা হলো, যা নিয়মিত পান করলে লিভার থাকবে সতেজ ও সক্রিয়।কফিকফি প্রেমীদের জন্য সুখবর। হ্যাঁ, কফি লিভারের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। নিয়মিত কফি পান করলে নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ (NAFLD) এবং লিভার ফাইব্রোসিসের মতো লিভারের রোগের ঝুঁকি কমে। এর কারণ হলো, কফিতে থাকা ক্লোরোজেনিক অ্যাসিডের মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রদাহ কমায় এবং লিভারের কোষকে রক্ষা করে। ২০১৬ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, প্রতিদিন ২ কাপ কফি পান করলে প্রায় সব ধরণের লিভারের রোগ থেকে দূরে থাকা যায়। এটি ফ্যাটি লিভার এবং লিভার ক্যান্সারের ঝুঁকিও কমায়। কফি পান করার সময়, অতিরিক্ত চিনি বা অতিরিক্ত ক্রিম এড়িয়ে চলতে ভুলবেন না। ক্যাফেইনমুক্ত কফিও একই রকম উপকারিতা প্রদান করে।গ্রিন টিলিভারের রোগের ওপর গ্রিন টি প্রতিরোধমূলক এবং থেরাপিউটিক উভয় প্রভাব ফেলে। এপিগ্যালোক্যাটেচিন গ্যালেট (EGCG) এর মতো ক্যাটেচিনে সমৃদ্ধ গ্রিন টি লিভারের স্বাস্থ্যের জন্য একটি শক্তিশালী সহযোগী। ২০১৫ সালের গবেষণার একটি মেটা-বিশ্লেষণে দেখা গেছে যে, গ্রিন টি লিপিড বিপাক নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে, যা লিভারে লিপিড জমা কমায়। গ্রিন টিতে থাকা প্রচুর পলিফেনলিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লিভারের জন্যও উপকারী। এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই করে, যা লিভারের ক্ষতির একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। প্রতিদিন এক থেকে দুই কাপ গ্রিন টি উপকারিতা প্রদান করতে পারে।বিটরুটের রসবিটের রস লিভারের জন্য বেশ উপকারী। নাইট্রেট এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, বিশেষ করে বিটালাইন সমৃদ্ধ বিটরুটের রস প্রদাহ-বিরোধী এবং ডিটক্সিফাইং উপকারিতা প্রদান করে। ২০১৯ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, বিটের রস লিভারের অক্সিডেটিভ ক্ষতি এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করতে পারে। সপ্তাহে একবার বা দুইবার বিটরুট রস উপকারী হতে পারে। তবে মনে রাখবেন, অতিরিক্ত না খাওয়াই ভালো।এক কাপ গরম চাকে জানত লিভারের স্বাস্থ্য বজায় রাখা চা পান করার মতোই সহজ! চা সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য ভালো, এবং কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে এটি লিভারের ওপরও প্রতিরক্ষামূলক প্রভাব ফেলে। ২০২১ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, চা খাওয়ার ফলে লিভারের স্টিটোসিস এবং প্রদাহ প্রতিরোধ করা হয়, অক্সিডেটিভ স্ট্রেস হ্রাস পায়। বিশেষ করে ডার্ক টি-তে অন্ত্রের মাইক্রোবায়োটা নিয়ন্ত্রণ করা হয়। অতিরিক্ত ক্যাফেইন এড়াতে মিষ্টি ছাড়া চা বেছে নিন এবং প্রতিদিন দুই থেকে তিন কাপের মধ্যে সীমিত রাখুন, অতিরিক্ত খেলে লিভারের উপর চাপ পড়তে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *