উয়েফার নতুন পরিকল্পনা: শীর্ষ দল পাবে ‘হোম অ্যাডভান্টেজ’ সুবিধা:

ডেস্ক রিপোর্ট :

নতুন এক যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে ইউরোপের সেরা ক্লাব প্রতিযোগিতা—উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ। টুর্নামেন্টের কাঙ্ক্ষিত নকআউট পর্বে বাড়তি সুবিধা পেতে পারে গ্রুপ পর্বে ভালো করা দলগুলো। ‘হোম অ্যাডভান্টেজ’ নীতির আওতায়, আগামী মৌসুম থেকেই নতুন এই নিয়ম কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল বলে জানিয়েছে ক্রীড়ামাধ্যম ইএসপিএন।ইতোমধ্যে প্রস্তাবটি ক্লাব কমপিটিশন কমিটিতে সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়েছে, আর অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে নির্বাহী কমিটির কাছে। সব ঠিকঠাক চললে ২০২৫-২৬ মৌসুম থেকেই কার্যকর হতে যাচ্ছে এই নতুন নিয়ম, যা চ্যাম্পিয়নস লিগের প্রতিযোগিতামূলক ভারসাম্যে নিয়ে আসতে পারে নতুন মাত্রা।গত শনিবার চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালের আগে উয়েফার ক্লাব কমপিটিশন কমিটির এক বৈঠকে প্রস্তাবটি সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়। আগামী ২৮ আগস্ট মৌসুমের ড্রয়ের আগেই এক ভার্চ্যুয়াল বৈঠকে এটি অনুমোদন দেবে উয়েফার নির্বাহী কমিটি। অনুমোদন পেলে ২০২৫-২৬ মৌসুম থেকেই কার্যকর হবে নিয়মটি।চ্যাম্পিয়নস লিগের নতুন সংস্করণে এবারই প্রথম ৩৬ দল নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে লিগ পর্ব। যেখানে শীর্ষ আটে থাকা দলগুলো সরাসরি উঠেছে শেষ ষোলোয় এবং পেয়েছে ফিরতি লেগ ঘরের মাঠে খেলার সুবিধা। কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনাল ও সেমিফাইনালে এখনো উন্মুক্ত ড্রয়ের মাধ্যমেই ঠিক হয় কোন দল কোথায় খেলবে। এতে অনেক সময় দেখা গেছে, লিগ পর্বে ভালো করেও ফিরতি লেগ খেলতে হয়েছে প্রতিপক্ষের মাঠে।যেমন, চলতি মৌসুমে লিগ পর্বে পিএসজি ছিল ১৫তম, আর আর্সেনাল ছিল তৃতীয়। তবু সেমিফাইনালের ফিরতি লেগ ঘরের মাঠে খেলেছে পিএসজি। একইভাবে, দ্বিতীয় স্থানে থাকা বার্সেলোনা খেলেছে চতুর্থ হওয়া ইন্টার মিলানের মাঠে। দুই ম্যাচেই জিতেছে ঘরের মাঠে খেলতে পারা দল—পিএসজি এবং ইন্টার। এতে প্রশ্ন উঠেছে, ফিরতি লেগে মাঠ সুবিধা না পাওয়া বড় দলগুলোর বিদায়ের পেছনে কি ভূমিকা রেখেছে লটারিভিত্তিক নিয়ম?একই পরিস্থিতি দেখা গেছে কোয়ার্টার ফাইনালেও। সেখানে রিয়াল মাদ্রিদ (১১তম) ফিরতি লেগ খেলেছে ঘরের মাঠে, প্রতিপক্ষ আর্সেনাল ছিল তৃতীয় স্থানে। বার্সেলোনা-ডর্টমুন্ড ম্যাচেও বার্সা (২য়) খেলেছে ডর্টমুন্ডের (১০ম) মাঠে।এসব উদাহরণ পর্যালোচনা করে উয়েফা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, লিগ পর্বে যত ভালো অবস্থানে থাকবে দল, নকআউট পর্বে ফিরতি লেগে তত বেশি ‘হোম অ্যাডভান্টেজ’ পাবে তারা। এতে বাড়বে প্রতিযোগিতার ন্যায়সংগত পরিবেশ এবং লিগ পর্বের গুরুত্বও।নিয়মটি কার্যকর হলে দলগুলো লিগ পর্বে আরও সিরিয়াস হয়ে নামবে, কারণ ভালো অবস্থানে শেষ করতে পারলে শেষ ষোলো, কোয়ার্টার ফাইনাল এমনকি সেমিফাইনালেও দ্বিতীয় লেগ ঘরের মাঠে খেলার সুবিধা পাওয়া যাবে। উদাহরণস্বরূপ, চলতি মৌসুমে লিগ পর্বে শীর্ষে ছিল লিভারপুল এবং দ্বিতীয় ছিল বার্সেলোনা। নিয়মটি আগে থেকেই কার্যকর থাকলে তারা নকআউট পর্বের প্রতিটি ধাপেই ঘরের মাঠে ফিরতি লেগ খেলতে পারত।চ্যাম্পিয়নস লিগে ‘হোম অ্যাডভান্টেজ’ নিয়ে নতুন এই সিদ্ধান্ত বদলে দিতে পারে ইউরোপিয়ান ফুটবলের চ্যাম্পিয়ন নির্ধারণের চেহারা। এখন অপেক্ষা শুধু আনুষ্ঠানিক অনুমোদনের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *