যমুনায় তলিয়ে গেলো তিনতলা স্কুল:
ডেস্ক রিপোর্ট :
যমুনার ভাঙন এখন ভয়াবহ রুপ ধারণ করেছে। টানা প্রবল বর্ষণ ও যমুনার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার বাচামারা, বাঘুটিয়া ও চরকাটারি ইউনিয়নে শুরু হয়েছে নদীভাঙন। গতকাল শনিবারের (৭ জুন) ভাঙনে ঈদের দিন দুপুরে যমুনায় বিলীন হয়ে গেছে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বাচামারা ইউনিয়নের তিনতলা ভারাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন। স্কুল ভবন বিলীন হয়ে যাওয়ায় ওই বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, মানিকগঞ্জ জেলার বুক চিরে বয়ে চলেছে পদ্মা, যমুনা, কালীগঙ্গা, ধলেশ্বরী, ইছামতী ও গাজীখালিসহ ১৪টি নদী। এইসব নদীপাড়ের মানুষের কাছে ভাঙন যেন নিত্যদিনের সঙ্গী। প্রতি বর্ষায় হাজারো মানুষ তাদের জমি, ঘরবাড়ি হারিয়ে পথে বসেন।গত এক সপ্তাহে ভাঙনের কবলে পড়ে কয়েক শত ঘরবাড়ি, বসতভিটা ও ফসলি জমিও নদীগর্ভে তলিয়ে গেছে। বর্ষা শুরু হলেই নদীপাড়ের মানুষকে আতঙ্কে দিন কাটাতে হয়। প্রতি বছর ভাঙনে নিঃস্ব হয়ে পড়ে হাজারো পরিবার। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, ভাঙন রোধে তারা জরুরি ভিত্তিতে ১৪ হাজার জিও ব্যাগ ফেলবে। বর্তমানে ভাঙনের চরম ঝুঁকিতে রয়েছে, দৌলতপুর উপজেলার চর কালিয়াপুর, বাঘুটিয়া, ভারাঙ্গা, রংদারপাড়া, বিষ্ণুপুর, রামচন্দ্রপুর, আবুডাঙ্গা পূর্বপাড়া, চরকাটারি বোর্ডঘর বাজার, চরকাটারি সবুজসেনা হাইস্কুল, চরভারাঙ্গা সরকারপাড়া, মজম শেকেরপাড়া, বাচামারা পশ্চিমপাড়া, উত্তরখন্ড, সুবুদ্ধি, পাচুরিয়া, বাঘুটিয়া বাজার, পারুরিয়া বাজার, রাহাতপুর, বৈন্যাঘাট, লাউতাড়া, লাউতাড়া আশ্রয়ন কেন্দ্র, চকবাড়াদিয়া, চকমিরপুর, ভাঙা রামচন্দ্রপুর, রামচন্দ্রপুর নতুনপাড়া, হাতকোড়া, চরমাস্তল, বিষ্ণুপুর খাঁপাড়া ও পারমাস্তলসহ অন্তত ২৮টি এলাকা।এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘দৌলতপুরসহ নদীপাড়ের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর ভাঙন ঠেকাতে আমরা জরুরি ভিত্তিতে ১৪ হাজার জিও ব্যাগ ফেলতে যাচ্ছি। পাশাপাশি নদীভাঙন রোধে একটি স্থায়ী প্রকল্প হাতে নেওয়ার লক্ষ্যে সম্ভাব্যতা যাচাই (ফিজিবিলিটি স্টাডি) চলছে। এর জন্য একটি কারিগরি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।’উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিয়ান নুরেন বলেন, ‘শুক্রবার বিদ্যালয় ভবনের ভাঙনের খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা প্রকৌশলীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল ভবনটি নিলামে দেওয়া সম্ভব কি না তা যাচাই করতে। সরেজমিনে দেখা যায়, ভবনটি ভাঙনের ফলে এতটাই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে যে, কোনো উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব হয়নি। পরে ঈদের দিন ভবনটি নদীগর্ভে সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে গেছে বলে আমরা নিশ্চিত হই।’