৪ দিন পর খোলপেটুয়া নদীর বাঁধ মেরামত, স্বস্তির নিঃশ্বাস

আশাশুনি ৪ এপ্র ২০২৫

৪ দিন পর খোলপেটুয়া নদীর বাঁধ মেরামত, স্বস্তির নিঃশ্বাস:

ডেস্ক রিপোর্ট: সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার খোলপেটুয়া নদীর ভেঙে যাওয়া যাওয়া বাঁধটি ৪ দিন পর শক্রবার দুপুরে জিও টিউবের মাধ্যমে রিং বাঁধ দিতে সক্ষম হয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ফলে লোকালয়ে নদীর জেয়ারের পানি প্রবেশ বন্ধ হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। তবে ৫দিন আগে ভেঙে যাওয়া অংশ দিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে ১১টি গ্রাম প্লাবিত হয়। পানিবন্দী হয়ে পড়ে ২০ হাজার পারবার। সকাল থেকে নদীর ভাঙ্গন এলাকা দিয়ে দুর্গত এলাকার পানি ভাটির নদীতে নামতে থাকে। তবে এখনো বসতবাড়িতে উঠান-আঙিনায় মাঠে-ঘাটে পানি জমে থাকায় জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। এখনও কৃষকের স্বপনে বোনা পাকা ধান ও মাছের ঘের তলিয়ে থাকায় সর্বশান্ত হয়ে পড়েছে উপকুলবাসী। স্থানীয়রা জানান, গত ৩১ মার্চ ঈদের দিন সকাল ৯টার দিকে পাউবো বিভাগ-২ এর আওতাধীন ৭/২ পোল্ডারের বিছট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন প্রায় দুই’শ ফুট এলাকা জুড়ে বেড়িবাঁধ হঠাৎ করেই খোলপেটুয়া নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। মুহূর্তের মধ্যে গ্রামবাসীর ঈদের আনন্দ নিরানন্দে পরিণত হয়। হাজার হাজার স্থানীয় গ্রামবাসী স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে দুই দিনে দফায় দফায় ভাঙন পয়েন্টে বিকল্প রিংবাধ নির্মাণের প্রাণপণ চেষ্টা চালালেও তা জোয়ারের তোড়ে ব্যর্থ হয়। পানিবন্দি হয়ে ১২ শ’ পরিবারের কয়েক হাজার মানুষ। পানিতে ভেসে গেছে প্রায় ৪ হাজার বিঘা মৎস্য ঘের এবং ২১ হেক্টর ফসলি জমি। বিধ্বস্ত হয়েছে শতাধিক কাঁচাঘর বাড়ি। বিদ্যুত বিহীন রয়েছে সেখানকার তিনটি গ্রাম। প্লাবিত এলাকায় দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির অভাব। একইসঙ্গে মানুষের রান্না-খাবার, হাঁস-মুরগী ও গো খাবারের অভাব দেখা দিয়েছে। বানভাসি মানুষ পার্শ্ববর্তী আশ্রয়কেন্দ্র ও পাউবো’র বাঁধে খোলা আকাশের নীচে আশ্রয় নিয়েছেন। আবার কেউ কেউ অন্যত্র আত্মীয়ের বাড়ী চলে গেছেন। ইতোমধ্যে পানিতে প্লাবিত হয়েছে আনুলিয়া ইউনিয়নের নয়াখালী, বিছট, বল্লবপুর, বাসুদেবপুর, আনুলিয়া, চেচুয়া, কাকবাশিয়া, মীর্জাপুর, চেউটিয়াসহ আশপাশের ১০ গ্রাম। বিভাগীয় কমিশনার মো. ফিরোজ সরকার এসময় বলেন, কীভাবে দীর্ঘ মেয়াদী একটি সুরাহা পাওয়া যায় সেজন্য আমরা একটি পরিকল্পনা করেছি। সে লক্ষে সবার সঙ্গে কথা বলছি। সব স্টেক হোল্ডারদের সহযোগিতা লাগবে। বিষয়টি প্রধান উপদেষ্টারও নজরে আনতে হবে। চেষ্টা করছি কিভাবে এখানে স্থায়ীভাবে কাজ করা যায়। আর প্লাবিত এলাকায় কি পরিমাণে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেটা জেলা প্রশাসক স্থানীয়ভাবে একটি জরিপ করছেন। সেটা শেষ হলে ক্ষতির পরিমাণটা নিরুপন করা যাবে। এসময় বেড়িবাঁধে অবৈধভাবে কেউ যাতে পাইপ বসাতে না পারে সেজন্য সরকারি নিয়মকানুন মেনে মৎস্য ঘের করার অনুরোধ জানান তিনি। আর কেউ যদি সরকারি আইন না মেনে ঘের করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার হবে বলে সতর্কতা জারি করেন।

ট্যাগ