অনিয়মিত খাবার খেয়ে অজান্তেই শরীরের যেসব ক্ষতি করছেন
অনিয়মিত খাবার খেয়ে অজান্তেই শরীরের যেসব ক্ষতি করছেন:
ডেস্ক রিপোর্ট: সকালের নাশতাকে বলা হয় দিনের আদর্শ ও গুরুত্বপূর্ণ খাবার। তবে এর অর্থ এই নয় যে দুপুরের ও রাতের খাবারের গুরুত্ব নেই। প্রতি বেলার খাবারেরই যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। কিন্তু আধুনিক সময় কর্ম ব্যস্ততার কারণে অনেকেরই সময়মত খাবার খাওয়া হয় না। দেখা যায় সকালের নাশতা খেতে খেতে প্রায় দুপুর হয়ে যায়। এ কারণে দুপুরের খাবার খেতে বিলম্ব হয়। একইভাবে রাতের খাবারেও হয়। কখনো কখনো তো খাবারই খাওয়া হয় না। সময়ের খাবার সময়মত খাওয়া না হলে শরীরের নানা ক্ষতি হয়। বিশেষ করে শরীরের ক্ষেত্রে দেখা যায় শরীর তার প্রয়োজনীয় পুষ্টি যেমন প্রোটিন, ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন ও খনিজ উপাদান থেকে বঞ্চিত হয়। ফলে শরীর তার শক্তি হারিয়ে ফেলে। হারিয়ে ফেলে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা। এ কারণে নতুন নতুন নানা রোগ বাসা বাধে এবং আগে থেকে থাকা ছোট ছোট রোগগুলো জটিল আকার ধারণ করে। স্বাস্থ্যবিষয়ক পরামর্শ প্রদান করা ওয়েবসাইট হেলথশটসের প্রতিবেদন অনুযায়ী এবার তাহলে সময়মত খাবার না খাওয়ার ক্ষতিকর দিকগুলো জেনে নেয়া যাক। বিপাক প্রক্রিয়া ধীর হওয়া: সময়ের খাবার সময়ে না খাওয়ার ফলে বিপাক প্রক্রিয়া ধীর হয়ে যায়। শরীর সংরক্ষণ প্রক্রিয়ায় চলে যায়। ওজন হ্রাস পায় বা বেড়ে যায়। নিউট্রিয়েন্ট জার্নালে প্রকাশিত ২০২১ সালের এক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সকালের নাশতা বাদ দেয়া এবং ওজনের মধ্যকার সম্পর্ক রয়েছে। গবেষকরা জানিয়েছেন, যারা সকালের নাশতা বাদ দেন তাদের স্বাস্থ্য অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। শক্তি কমে যাওয়া: আপনি স্বাস্থ্যকর যে খাবারই খান না কেন, সবশেষ তা শরীরকে গ্লুকোজ সরবরাহ করে। যা একসময় শক্তিতে রূপান্তর হয়। সময়মত বা নিয়মিত খাবার খাওয়া না হলে ক্লান্তিবোধ, দুর্বলতা ও মস্তিস্কের কার্যকারিতা হ্রাস পাওয়ার মতো সমস্যা অনুভব হয়। মেজাজ খারাপ হওয়া: সকালে নাশতা, দুপুরের খাবার বা রাতের খাবার এড়িয়ে যাওয়ার ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এ থেকে অযথাই বিরক্তি ও মেজাজ বিগড়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি হয়। কাজে মনোযোগ দিতে অসুবিধা হয়। মস্তিষ্কের পুষ্টির অভাবে সবসময় উদ্বিগ্ন এবং মাঝে মধ্যে আক্রমণাত্মক বোধ করার মতো সমস্যা হয়। সময়ের খাবার না খাওয়ার পর অতিরিক্ত খাওয়া: সময়ের খাবার সময়ে না খাওয়ার ফলে পরবর্তীতে অতিরিক্ত ক্ষুধা পায়। এ কারণে খাবারও বেশি খাওয়া হয়। সকালের নাশতা, দুপুর ও রাতের খাবার না খাওয়ার ফলে বেশি ক্ষুধার্ত বোধ করেন। এ কারণে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা অনেক সময় কঠিন হয় পড়ে। পরবর্তীতে অধিক ক্যালোরি গ্রহণের প্রয়োজন হয় এবং এ থেকে ওজন বেড়ে যেতে পারে। পুষ্টির ঘাটতি: সময়ের খাবার সময়ে খাওয়া না হওয়ার বিষয়টি যদি নিয়মিত হতে থাকে তাহলে ভিটামিন ও খনিজের মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাব দেখা দিতে পারে। এ থেকে শরীরের ক্রিয়াকলাপ নেতিবাচকভাবে প্রভাব ফেলে থাকে। এই প্রক্রিয়া দীর্ঘমেয়াদে চলতে থাকলে রক্তাল্পতা বা হাড় দুর্বল হওয়ার সমস্যাও হতে পারে। রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পাওয়া: সময়ের খাবার সময়ে না খাওয়া হলে শরীর সঠিক পুষ্টি পায় না। এ কারণে ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হয়ে যায়। ফলে ছোট ছোট বিভিন্ন সংক্রমণ ও অসুস্থতায় অল্পতেই হাঁপিয়ে উঠতে হয়। হজমে সমস্যা: সময়মত না খাওয়ার ফলে পেট ফুলে যাওয়া, বমি বমি ভাব, অ্যাসিড রিফ্লাক্সের মতো সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অনিয়মিত খাবার খাওয়া হজম প্রক্রিয়ায়ও সমস্যা করে। এ থেকে অস্বস্তি ও কখনো কখনো ব্যথ্যাও হয়ে থাকে। পেট খিঁচুনি ও কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যাও হয়ে থাকে।