ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত অঞ্চলেও চলছে বিমান হামলা

বিশ্ব ১০ এপ্র ২০২৫

ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত অঞ্চলেও চলছে বিমান হামলা:

ডেস্ক রিপোর্ট:

ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েও মিয়ানমারের সামরিক জান্তা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ড্রোন ও বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছে স্থানীয় বিভিন্ন সূত্র। মিয়ানমারের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের অধীন মানবাধিকার মন্ত্রণালয় জানায়, ভূমিকম্পে ধ্বংস হওয়া অঞ্চলগুলোতেও বার্মিজ জান্তার আক্রমণ চালিয়েছে। গত ২৮ মার্চ থেকে শুরু করে গেল এপ্রিল ৮ পর্যন্ত চালানো হামলায় ৭২ জন নিহত এবং ৯১ জন আহত হন। গত মঙ্গলবার জান্তা বাহিনী আয়েয়ারওয়াদি অঞ্চলের লেম্যেথনা টাউনশিপের টোন তাও গ্রামে ড্রোন হামলা চালায়। অঞ্চলটি প্রতিবেশী রাখাইন রাজ্যের কাছাকাছি এবং বর্তমানে প্রতিরোধ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সকালে টোন তাওয়ের কাছে বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পেয়েছি। এর দুই দিন আগেও ড্রোন হামলা চালানো হয়েছিল। গত ২৮ মার্চ মিয়ানমারে ৭.৭ মাত্রার বিধ্বংসী ভূমিকম্প আঘাত হানে, যার প্রভাবে দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালেসহ কেন্দ্রীয় অঞ্চলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ভূমিকম্পের এক দিন আগেই ইনগাপু টাউনশিপের কুইন কউক গ্রামে অবস্থিত সামরিক প্রশিক্ষণ স্কুলের কাছে সংঘর্ষের খবর পাওয়া গিয়েছিল। ভূমিকম্পের পর ২৯ মার্চ জাতীয় ঐক্য সরকার (এনইউজি) ও অন্যান্য প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলো যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করলেও সামরিক সরকার চার দিন পর, ব্যাপক সমালোচনার মুখে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে। কিন্তু এরপরও তারা আক্রমণ বন্ধ করেনি। ২৯ মার্চ আয়েয়ারওয়াদি অঞ্চলের ওয়ার তাও কউন গ্রামে জান্তা বাহিনীর প্যারামোটর হামলায় কমপক্ষে চারজন নিরীহ নাগরিক নিহত হন। নিহতদের মধ্যে দুইজন পুরুষ ও দুইজন নারী ছিলেন, যারা বোমা আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পথে ঘরেই নিহত হন। একই হামলায় আরও তিনজন আহত হন এবং একটি ফুটবল মাঠে ফেলা বোমায় এক ডজন গবাদিপশু নিহত হয়। আয়েয়ারওয়াদি ইয়ুথস ইউনিয়নের তথ্য মতে, ১৯ মার্চ থেকে শুরু হওয়া এই সংঘর্ষের ফলে লেম্যেথনা টাউনশিপ থেকে ২,০০০-এরও বেশি মানুষ পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। এক বাসিন্দা বলেন, আমরা আমাদের গ্রামে ফিরতে পারি না। আর যদি ফিরেও যাই, আবার পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকবে না। রাখাইন রাজ্য থেকে ছড়িয়ে পড়া লড়াই বর্তমানে আয়েয়ারওয়াদি অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়েছে। জান্তা নিয়ন্ত্রিত ঘাঁটিগুলোর দিকে আরাকান আর্মির নেতৃত্বে প্রতিরোধ বাহিনী অগ্রসর হচ্ছে। এছাড়াও ভূমিকম্পের পর দক্ষিণ শান রাজ্যের ন্যাউংশো টাউনশিপের ইয়েপু ও হ্পা ইয়ার তাউং গ্রামেও ড্রোন হামলার খবর পাওয়া গেছে। ৩০ ও ৩১ মার্চ এবং ৫ এপ্রিল এই হামলাগুলো চালানো হয়, যাতে কমপক্ষে পাঁচটি বাড়ি ধ্বংস হয়ে যায়। ইনলে লেকের দক্ষিণে প্রায় ২৭ মাইল দূরে অবস্থিত এই অঞ্চলে ভূমিকম্পে আগে থেকেই প্রায় ২,৫০০ বাড়ি ধ্বংস হয়েছে।

ট্যাগ