বড় মাত্রার ভূমিকম্প হলে করণীয়, যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা

২৯ মার্চ ২০২৫

বড় মাত্রার ভূমিকম্প হলে করণীয়, যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা:

ডেস্ক রিপোর্ট:

মিয়ানমারে ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ১৪৪ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছে ৭৩২ জন। শুক্রবার (২৮ মার্চ) রাতে রাষ্ট্র পরিচালিত এমআরটিভি তাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে এ তথ্য জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের তথ্যমতে, স্থানীয় সময় শুক্রবার বেলা ১২টা ৫০ মিনিটে মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলীয় শহর মান্দালয়ের কাছে ৭ দশমিক ৭ তীব্রতার ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল। প্রায় ১১ মিনিট পর ৬ দশমিক ৪ মাত্রার ভূমিকম্প-পরবর্তী কম্পন অনুভূত হয়। প্রতিবেশী বাংলাদেশ, ভারত, থাইল্যান্ড, চীন ও ভিয়েতনামেও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। ৭ দশমিক ৭ তীব্রতার ভূমিকম্পকে শক্তিশালী বলে ধরা হয়। এটার উৎপত্তিস্থল মাটির প্রায় ছয় মাইল গভীরে। কম গভীরতায় হওয়ায় কম্পন ভয়াবহভাবে অনুভূত হয়েছে। এসব ছোট ছোট ভূমিকম্প বড় ভূমিকম্পের আভাস দিচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। এই অঞ্চলে ৮.২ থেকে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প হওয়ার শক্তি সঞ্চিত হয়ে আছে। এতো বড় মাত্রার ভূমিকম্প হলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে ঢাকা নগরী। অপরিকল্পিত নগরী হওয়ায় এখানকার ১ শতাংশ বিল্ডিংও যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে দুই লাখ লোকের প্রাণহানি ঘটবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। কলম্বো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার বরাত দিয়ে প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়, এ অঞ্চলে ভূগর্ভে দুটি প্লেট ধাবিত হচ্ছে। ইন্ডিয়া প্লেট পূর্বদিকে যাচ্ছে। বার্মা প্লেট পশ্চিমের দিকে আসছে। বার্মা প্লেটের নিচে ইন্ডিয়া প্লেট তলিয়ে যাচ্ছে। এটিকে বলে ‘সাবডাকশন জোন’। জানা গেছে, প্রতি বছর ১ মিটার থেকে দেড় মিটার সংকোচন হচ্ছে। সে হিসাবে এখানে ৮.২ থেকে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প হওয়ার শক্তি সঞ্চিত হয়ে আছে। যে কোনো সময় এ ভূমিকম্প হতে পারে। ভূমিকম্পে করণীয় জানা থাকলে অনেক বিপদই পাশ কাটানো সম্ভব। জেনে নিন ভূমিকম্প হলে করণীয় কি-

*ভূমিকম্প হচ্ছে টের পেলে বা খবর পেলে সঙ্গে সঙ্গে ফাঁকা ও উন্মুক্ত স্থানে আশ্রয় নিন। *উঁচু ভবনে থাকলে এবং বের হতে না পারলে জানালা বা দেয়ালের পাশে অবস্থান না নিয়ে শক্ত কোনো বীম, টেবিলের নিচে অবস্থান নিন। *হতবিহ্বল না হয়ে ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি মোকাবেলা করুন। *বহুতল ভবনে একই জায়গায় অনেক মানুষ একসঙ্গে না থেকে ভাগ হয়ে আশ্রয় নিন। *আপনার মুঠোফোনে ফায়ার সার্ভিস এবং দরকারি মোবাইল নম্বরগুলো আগাম সতর্কতা হিসেবে আগেই রেখে দিন। বিপদের সময় আপনার কাজে লাগবে। *দ্রুত নামার জন্য ভবন থেকে লাফিয়ে পড়বেন না। *ভূমিকম্পের সময় সম্ভব হলে মাথার ওপর শক্তকরে বালিশ অথবা অন্য কোনো শক্ত বস্তু [কাঠবোর্ড, নরম কাপড় চোপড়ের কুণ্ডলি] ধরে রাখুন। *গ্যাস এবং বৈদ্যুতিক সংযোগ থেকে দূরে অবস্থান নিন। *উচু ভবন থেকে দ্রুত নামার জন্য লিফট ব্যবহার করবেন না। *ভূমিকম্পের সময় গাড়িতে থাকলে গাড়ি খোলা জায়গায় থামিয়ে গাড়িতেই থাকুন। *একবার ভূমিকম্পের পরপরই আরেকটা ছোট ভূমিকম্প হয় যাকে ‘আফটার শক’ বলে। নিজেকে বিপদমুক্ত ভাবতে অন্তত একঘণ্টা সময় নিন।