প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে চরম মূল্য দিতে হলো তুষারকে

অপরাধ ৭ এপ্র ২০২৫

প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে চরম মূল্য দিতে হলো তুষারকে:

ডেস্ক রিপোর্ট: চাঁদপুরের কচুয়ায় প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে গণপিটুনিতে তুষার (২৫) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। সোমবার (৭ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মৃত্যু বরণ করেন তিনি। এ ঘটনায় সোমবার প্রেমিকা ফিমা আক্তার (১৮) ও তার মা হাছিনা বেগমকে (৪৫) আটক করেছে কচুয়া থানা পুলিশ। এর আগে রোববার (৬ এপ্রিল) রাতে উপজেলার গোহট দক্ষিণ ইউনিয়নের রাজারপুর গ্রামের প্রেমিকা ফিমা আক্তারের সঙ্গে দেখা করতে গেলে গণপিটুনিতে মারাত্মকভাবে আহত হন তুষার। নিহত নূর মোহাম্মদ তুষার মনোহরপুর গ্রামের মৃত মিজানুর রহমানের ছেলে। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, উপজেলার গোহট দক্ষিণ ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের আব্দুল মান্নানের মেয়ে প্রেমিকা ফিমা আক্তার (১৮) সঙ্গে রোববার রাতে দেখা করতে যান একই উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের নকড়া বাড়ির মৃত মিজানুর রহমানের ছেলে নূর মোহাম্মদ তুষার। এ সময় প্রেমিকার পরিবার ও বাড়ির লোকজন তুষারকে দেখে ফেলে। পরে তাকে আটক করে গণপিটুনি দেয়। পরবর্তীতে তুষারকে ফিমার বাড়ির লোকজন তুষারের মা তাছলিমা বেগমকে খবর দিয়ে ডেকে এনে তার হাতে তুলে দেয়। পরে তুষারকে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করানো হয়। সোমবার সকাল থেকে তার অবস্থার অবনতি দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়। তবে শেষ পর্যন্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার দুপুরে তিনি মৃত্যু বরণ করেন। নিহতের মা তাসলিমা বেগম বলেন,‘তুষার ও ফিমার ফেইসবুকে পরিচয় হয়। এরপর তাদের দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। তাদের দুইজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক আমি জানতাম। গতকাল রোববার রাতে ফিমার বাড়ির এক লোক আমাকে ফোন করে জানায় আমার ছেলে তুষারকে তাদের বাড়িতে আটকিয়ে রাখা হয়েছে। আমি দ্রুত একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে রাজাপুর গ্রামের ওই বাড়িতে গিয়ে ছেলেকে রক্তাক্ত ও অজ্ঞান অবস্থায় দেখতে পাই। ছেলেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি করাই। কিন্তু সোমবার দুপুরেই তুষার আমাকে ছেড়ে চলে যায়।’ কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স আবাসিক মেডিক্যাল কর্মকর্তা ডা. জাহিদ হোসাইন বলেন, ‘তুষারকে যখন হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয় তখন তিনি অজ্ঞান অবস্থায় ছিলেন। তার অবস্থার অবনতি দেখে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। কিন্তু রোগীর সাথে আসা তার মা ও লোকজন তার কি হয়েছে? তা গোপন করে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দেন। রোগীর অবস্থা খুবই খারাপ রোগী কোমায় চলে গেছে, বার বার বলার পরেও রোগীর সঙ্গে আসা লোকজনরা হাসপাতালে ভর্তি করানোর জন্য চাপ প্রয়োগ করলে চিকিৎসকরা হাসপাতালে ভর্তি নেয়।’ তিনি আরো বলেন, ‘সকালে রোগীর অবস্থা আরো অবনতি দেখে রোগীর মাকে দ্রুত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার জন্য বললেও রোগীর স্বজনরা কর্ণপাত করেনি। তার হেড ইনজুরির কারণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’ কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘হত্যাকাণ্ড জড়িত সন্দেহে প্রেমিকা ফিমা আক্তার ও তার মা হাছিনা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আটক করা হয়েছে। নিহতের লাশ উদ্ধার করে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।’

ট্যাগ